ভুল বালিশে ঘুমের বারোটা বাজতে পারে; যেভাবে সঠিক বালিশ বেছে নেবেন
সঠিক বালিশ ঘাড়ব্যথা, পিঠব্যথা ও মাথাব্যথার মতো সমস্যা কমায়। এটি মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বাঁক ঠিক রাখে। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ও ঘুম বিশেষজ্ঞ মাইকেল ব্রিউস একে ‘চাপমুক্ত ঘুমের ব্যবস্থা’ বলেছেন। বালিশ প্রস্তুতকারকদের বিজ্ঞাপনের বাইরেও এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, সঠিক বালিশ ঘুমের কার্যকারিতা, অক্সিজেন চলাচল, অঙ্গভঙ্গি এমনকি পরদিনের মানসিক দক্ষতার ওপরও প্রভাব ফেলে।
ভুল বালিশে ঘুমের বারোটা বাজতে পারে; যেভাবে সঠিক বালিশ বেছে নেবেন
সঠিক বালিশ ঘাড়ব্যথা, পিঠব্যথা ও মাথাব্যথার মতো সমস্যা কমায়। এটি মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বাঁক ঠিক রাখে। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ও ঘুম বিশেষজ্ঞ মাইকেল ব্রিউস একে ‘চাপমুক্ত ঘুমের ব্যবস্থা’ বলেছেন। বালিশ প্রস্তুতকারকদের বিজ্ঞাপনের বাইরেও এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, সঠিক বালিশ ঘুমের কার্যকারিতা, অক্সিজেন চলাচল, অঙ্গভঙ্গি এমনকি পরদিনের মানসিক দক্ষতার ওপরও প্রভাব ফেলে।
সঠিক বালিশ ঘাড়ব্যথা, পিঠব্যথা ও মাথাব্যথার মতো সমস্যা কমায়। এটি মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বাঁক ঠিক রাখে। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ও ঘুম বিশেষজ্ঞ মাইকেল ব্রিউস একে ‘চাপমুক্ত ঘুমের ব্যবস্থা’ বলেছেন। বালিশ প্রস্তুতকারকদের বিজ্ঞাপনের বাইরেও এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, সঠিক বালিশ ঘুমের কার্যকারিতা, অক্সিজেন চলাচল, অঙ্গভঙ্গি এমনকি পরদিনের মানসিক দক্ষতার ওপরও প্রভাব ফেলে।
রাতে ভালো ঘুম না হলে অনেকেই মানসিক চাপ, ঘরের তাপমাত্রা বা তোশককে দায়ী করেন। কিন্তু ঘুমের আয়োজনের সবচেয়ে ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটির কথা হয়তো ভুলেই যান। সেটি হলো বালিশ।
দেখতে সাধারণ তুলার তৈরি মনে হলেও এটি বেশ কাজের। ঘুম বিশেষজ্ঞরা বলেন, বালিশ আপনার ঘুমের গভীরতা নিয়ন্ত্রণ করে। কখন ঘুম আসবে বা ঘুম ভাঙার পর ঘাড়, মেরুদণ্ড, শ্বাস-প্রশ্বাস ও মস্তিষ্কের অবস্থা কেমন থাকবে—সবই নির্ভর করে এর ওপর।
র্যান্ড করপোরেশনের ঘুম বিশেষজ্ঞ ওয়েন্ডি ট্রক্সেল বলেন, ‘ঘুম একটি নাজুক অবস্থা। ঘুমানোর আগে মস্তিষ্ক ও শরীর নিরাপত্তা চায়। বালিশ ও বিছানার আরাম সেই নিরাপত্তার সংকেত দেয়।’
সঠিক বালিশ ঘাড়ব্যথা, পিঠব্যথা ও মাথাব্যথার মতো সমস্যা কমায়। এটি মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বাঁক ঠিক রাখে। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ও ঘুম বিশেষজ্ঞ মাইকেল ব্রিউস একে ‘চাপমুক্ত ঘুমের ব্যবস্থা’ বলেছেন।
বালিশ প্রস্তুতকারকদের বিজ্ঞাপনের বাইরেও এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, সঠিক বালিশ ঘুমের কার্যকারিতা, অক্সিজেন চলাচল, অঙ্গভঙ্গি এমনকি পরদিনের মানসিক দক্ষতার ওপরও প্রভাব ফেলে।
বালিশ যেভাবে ঘুমের মান ও গতি নিয়ন্ত্রণ করে
গবেষণায় দেখা গেছে, বালিশের উচ্চতা ও শক্ত ভাব ঘুমের মানের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। বালিশ ঠিক না হলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
ট্রক্সেল ব্যাখ্যা করেন, বালিশ বেশি উঁচু বা শক্ত হলে ঘাড় সামনের দিকে ঝুঁকে থাকে। আবার নিচু বা নরম হলে ঘাড় পেছন বা পাশে হেলে পড়ে। দুই অবস্থাতেই পেশিতে টান পড়ে। হাড়ের জোড়ায় চাপ লাগে, শ্বাসনালি বাধাগ্রস্ত হয় এবং ‘মাইক্রো-অ্যারাউজাল’ বা ক্ষণিকের জন্য ঘুম ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। এতে রাতে বারবার ঘুম ভেঙে যায় ও ব্যথা বাড়ে।

সঠিক বালিশ ঘাড়ব্যথা, পিঠব্যথা ও মাথাব্যথার মতো সমস্যা কমায়। ছবি : সংগৃহীত
সিমন্স ইউনিভার্সিটির ফিজিওথেরাপিস্ট ম্যাথিউ ও’রউরক বলেন, ‘সঠিক মাপের বালিশ ঘাড়কে নিরপেক্ষ বা সোজা অবস্থানে রাখে। এতে টিস্যুগুলো সারা রাত শিথিল থাকে ও সেরে ওঠে।’
বালিশ কী দিয়ে তৈরি, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি আরামের অনুভূতি দেয় এবং ঘুমের মধ্যে শরীরের অবস্থান ঠিক রাখে।
ঠিকঠাক বালিশ পেশির ব্যথা কমায় ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ব্রিউস জানান, শরীরে ব্যথার সংকেত কম থাকলে মস্তিষ্ক দ্রুত ঘুমের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে।
সঠিক বালিশ গভীর ঘুমে (স্লো-ওয়েভ ও রেম স্লিপ) সাহায্য করে। শরীরের মেরামত, শিক্ষা ও আবেগের জন্য এই ধাপগুলো জরুরি। ক্যালিফোর্নিয়ার হান্টিংটন মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক রাজ দাসগুপ্ত বলেন, ‘আরামদায়ক বালিশ রাতে বারবার ঘুম ভাঙা রোধ করে।’
গবেষণায় দেখা গেছে, ভালো ঘুমের জন্য বালিশের আরাম খুবই জরুরি। এক গবেষণায় দেখা যায়, যাদের ঘুমের সমস্যা আছে, তাদের ৫০ শতাংশই বালিশের অস্বস্তিকে এর মূল কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন।
ঘুমের সমস্যায় বালিশের ভূমিকা
বালিশ শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপরও প্রভাব ফেলে। বালিশের উচ্চতা ও আকার শ্বাসনালি খোলা রাখতে সাহায্য করে।
ট্রক্সেল জানান, যারা নাক ডাকেন বা স্লিপ অ্যাপনিয়ায় (ঘুমে শ্বাসকষ্ট) ভুগছেন, তাদের জন্য বালিশ খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাথা ও ঘাড় সামান্য উঁচুতে রাখলে শ্বাসকষ্ট কমে ও ঘুমের মান বাড়ে।

দীর্ঘদিন ভুল অবস্থানে ঘুমালে শরীরে প্রদাহ বাড়ে। এর ফলে চলাচলে সমস্যা, টেনশন মাথাব্যথা ও ঘাড়ে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
ও’রউরক বলেন, ‘ভুল বালিশে ঘুমালে শ্বাসনালি সরু হয়ে যেতে পারে। এতে জিহ্বা পেছনের দিকে গিয়ে শ্বাসনালি আংশিক বন্ধ করে দেয়। ফলে নাক ডাকার সমস্যা বেড়ে যায়।’
তবে শুধু বালিশ পরিবর্তন করে স্লিপ অ্যাপনিয়া বা জটিল রোগ সারে না। ব্রিগহাম অ্যান্ড উইমেনস হসপিটালের ঘুম বিজ্ঞানী রেবেকা রবিনস বলেন, ‘স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।’
জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের ইন্টারভেনশনাল পেইন মেডিসিন বিভাগের পরিচালক গীত পলের মতে, ঘাড় ও মেরুদণ্ড ঠিক থাকলে পেশি শিথিল থাকে। শ্বাসনালি খোলা থাকে এবং ব্যথা কমে। ফলে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর ঝরঝরে লাগে।
দীর্ঘদিন ভুল অবস্থানে ঘুমালে শরীরে প্রদাহ বাড়ে। এর ফলে চলাচলে সমস্যা, টেনশন মাথাব্যথা ও ঘাড়ে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা হতে পারে। এমনকি শরীরের ভঙ্গিও নষ্ট হয়ে যায়।
দাসগুপ্ত জানান, স্মৃতিশক্তি, রোগ প্রতিরোধ ও মেজাজ ঠিক রাখতে গভীর ঘুম জরুরি। ঘুমে ব্যাঘাত ঘটলে পরদিন মনোযোগ, মেজাজ ও কাজের শক্তি কমে যায়।
সবার জন্য এক বালিশ নয়: সঠিকটি বাছবেন যেভাবে
সবার জন্য এক মাপের বা উপাদানের বালিশ কাজ করে না। তবে কিছু নিয়ম মানলে সঠিক বালিশ খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।
রবিনস বলেন, ‘বালিশ কেনার আগে আপনার ঘুমানোর ভঙ্গি বিবেচনা করুন। আপনি চিত হয়ে, উপুড় হয়ে নাকি কাত হয়ে ঘুমান, তার ওপর ভিত্তি করেই বালিশ বাছতে হবে।’
এরপর বালিশের উচ্চতা বা পুরুত্ব ঠিক করতে হবে। ট্রক্সেল বলেন, ‘শরীরের আকার ও কাঁধের প্রস্থ অনুযায়ী বালিশের উচ্চতা হওয়া উচিত।’
যিনি কাত হয়ে ঘুমান, তার বালিশ সবচেয়ে উঁচু হওয়া প্রয়োজন। চিত হয়ে ঘুমানোদের জন্য মাঝারি উচ্চতা ভালো। আর যিনি উপুড় হয়ে ঘুমান, তার খুব পাতলা বালিশ ব্যবহার করা উচিত বা বালিশ ছাড়াই ঘুমানো ভালো। দাসগুপ্ত পরামর্শ দেন, ‘উপুড় হয়ে ঘুমালে পাতলা বা নরম বালিশ খুঁজুন।’
ও’রউরক বলেন, উচ্চতা ঠিক করতে ‘অ্যাডজাস্টেবল’ বা পরিবর্তনযোগ্য বালিশ ব্যবহার করা যেতে পারে। শোয়া অবস্থায় ঘাড় সোজা আছে কি না, তা বুঝতে সঙ্গীকে দিয়ে ছবি তুলিয়ে নেওয়া ভালো।

ধুলোবালি থেকে বাঁচতে হাইপো-অ্যালার্জেনিক বালিশের কভার ব্যবহার করা একটি ভালো কৌশল। । ছবি: সংগৃহীত
গীত পল জানান, তোশকের কথাও মাথায় রাখতে হবে। নরম তোশকে শরীর ডেবে যায়, তাই নিচু বালিশ মানানসই। আর শক্ত তোশকে শরীর উঁচুতে থাকে, তাই নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রাখতে একটু উঁচু বালিশ লাগতে পারে।
বালিশের ভেতরের উপকরণও গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, মেমোরি ফোম, ল্যাটেক্স বা রবারের বালিশ সাধারণ তুলা বা পালকের বালিশের চেয়ে ভালো। এগুলো মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বাঁক ধরে রাখতে এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের স্টিফেন ডেরিং বলেন, ‘ফোমের বালিশ সারা রাত সমান সাপোর্ট দেয়। তবে অনেকে ফোমে ডেবে যাওয়া পছন্দ করেন না। তাদের জন্য ল্যাটেক্স ভালো, কারণ এটি বেশ স্থিতিস্থাপক। এটি ঘাড়ের সাপোর্ট দেয় কিন্তু ডেবে যায় না।’
এসব স্থিতিশীল উপাদান স্নায়ুর চাপ কমায় এবং সকালে ঘাড়ের আড়ষ্ট ভাব দূর করে।
বালিশের যত্ন নেওয়াও জরুরি। দাসগুপ্ত জানান, নোংরা বালিশে ধূলিকণা, মৃত কোষ ও জীবাণু জমে। এতে শ্বাসকষ্ট, ত্বকের সমস্যা ও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
ট্রক্সেল বলেন, ‘বালিশের কাভার প্রতি সপ্তাহে ধোয়া উচিত। আর প্রতি এক থেকে দুই বছর পর পর বালিশ বদলে ফেলা ভালো।’ তবে ভালো মানের ল্যাটেক্স বা ফোমের বালিশ বেশিদিন টিকতে পারে।
বালিশ বদলানোর সময় হয়েছে কি না, তা বুঝতে গীত পল একটি পরীক্ষার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘বালিশটি ভাঁজ করার পর যদি আগের অবস্থায় ফিরে না আসে, তবে বুঝবেন এটি বদলানোর সময় হয়েছে।’
রবিনস জানান, ধুলোবালি থেকে বাঁচতে হাইপো-অ্যালার্জেনিক কভার ব্যবহার করা একটি ভালো কৌশল। শেষ কথা হলো, বিভিন্ন ধরনের ও উচ্চতার বালিশ ব্যবহার করে দেখতে হবে কোনটি আপনার জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক। ও’রউরক বলেন, ‘সঠিক বালিশ খুঁজতে একটু সময় লাগতে পারে। তবে চেষ্টা করলে খুব বেশি খরচ না করেই আরামদায়ক বালিশ খুঁজে পাওয়া সম্ভব।’