পানিতে ডুবিয়ে আট কুকুরছানা হত্যায় মামলা: সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী গ্রেপ্তার

3 DEC WEB
ছবি: সংগৃহীত

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ চত্বরে বস্তাবন্দী করে আটটি কুকুরছানাকে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগে সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী নিশি খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতে ঈশ্বরদীতে নতুন ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯-এর ৭ ধারায় মামলা করেন। মামলায় ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি খাতুনকে একমাত্র আসামি করা হয়।

নৃশংস এই ঘটনার জেরে অভিযুক্তের স্বামী হাসানুর রহমান নয়নের পরিবারকে সরকারি কোয়ার্টার ছাড়ার নির্দেশ দেয় উপজেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ‘মঙ্গলবারই তাদের বাসা খালি করতে বলা হয়, তারা সেদিনই কোয়ার্টার ছাড়েন। পরে গার্লস স্কুলের পাশে নতুন বাসা ভাড়া নিলে রাত দেড়টার দিকে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে নিশি খাতুনকে গ্রেপ্তার করে।’

গত রোববার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর উপজেলা চত্বরের গেজেটেড ভবনে বসবাসরত কর্মকর্তা নয়নের স্ত্রী নিশি খাতুন কুকুরছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। 

ইউএনবি জানায়, ছানাগুলো নিখোঁজ হওয়ার পর মা কুকুরটি সারা রাত আবাসিক এলাকা ও অফিসার্স ক্লাবের বিভিন্ন বাসাবাড়িতে চিৎকার করে ছোটাছুটি করে এবং খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেয়। সচরাচর ছানাগুলো ইউএনও’র বাসভবনের সিঁড়ির নিচে থাকত।

ইউএনও’র বাসভবনের কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সোমবার সকালে নয়ন স্যার মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। আমি ছানাগুলোর কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, তিনি জানেন না। তখন তার ছেলে বলে, তার মা ছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। পরে আমরা পুকুরে গিয়ে ভাসমান বস্তা দেখি। সেটি খুলে আটটি মৃত কুকুরছানা পাওয়া যায়।’

মৃত ছানাগুলোকে দেখে মা কুকুরটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মীরা তাকে চিকিৎসা দেন এবং ঘুমের ইনজেকশন প্রয়োগ করেন। 

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বিষয়টিকে ‘অমানবিক’ উল্লেখ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা থেকে ‘অ্যানিমেল অ্যাক্টিভিস্ট’ কমিটির একটি তদন্ত দল ঈশ্বরদীতে গিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করে।